নাশকতায় উস্কানিমূলক সংবাদ প্রচার করবে না চ্যানেলগুলো
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
চলমান হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে সহিংসতা ও নাশকতা প্রতিরোধে সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশন (টিভি) চ্যানেলের মালিক-কর্মকর্তারা।
অবরোধ-হরতাল কর্মসূচির সন্ত্রাস, নাশকতা ও সহিংসতা সহায়ক কোনো খবর প্রচার থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করেছেন তারা ।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সিনিয়র মন্ত্রী, বিভিন্ন ইলেট্রনিক মিডিয়ার মালিক ও কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় বৈঠকে এসব বিষয়ে ঐক্যমত প্রকাশ করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামাল কামাল, মাছরাঙা টেলিভিশনের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন চৌধুরী, চ্যানেল একাত্তরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, বৈশাখী টেলিভিশনের সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলসহ বিভিন্ন সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও নাশকতা চালিয়ে সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছে। সন্ত্রাস এবং নাশকতা মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। নাশকতা মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারে না। জাতীয় জীবনে বিবেকের তাড়নায় সন্ত্রাস, সহিংসতা ও নাশকতা প্রতিরোধে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মালিক ও কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য, রপ্তানিসহ বর্তমান সবধরনের অবস্থা স্বাভাবিক দাবি করে সরকারের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা প্রকৃত অর্থে স্বাভাবিক। তা সাধারণ মানুষ জানতে পারছে না। দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য, রপ্তানি সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। এ বিষয়গুলো মানুষ অবহিত নয়।
এ সত্য তুলে ধরার পাশাপাশি হাইওয়েতে প্রতিদিন যে ৫০-৬০ হাজার গাড়ি চলাচল করছে- তা মানুষকে অবহিত করার জন্য মিডিয়া মালিকদের অনুরোধ করেছি, তারা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন।
মানুষ সত্য না জানার কারণ হিসেবে আমু বলেন, দুই একটি বাস বা ট্রাক পোড়ানো এমনভাবে মানুষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে বা সম্প্রচার হয়েছে সে জন্য তারা মনে করে সারা দেশে অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এ সত্য বিষয়গুলো দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে মিডিয়া মালিকদের অনুরোধ করেছি। সন্ত্রাস ও নাশকতা কখনো একটা জাতিকে পথ দেখাতে পারে না জানিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাস জাতিকে, রাজনীতিকে পথ দেখাতে পারে না। আদর্শ স্থাপন করতে পারে না।
শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বা নাশকতা এগুলো মানুষকে নিরাপত্তাহীন করতে পারে, নিরাপত্তা দিতে পারে না। আজকে যে কাণ্ড তারা করছে, এতে মানুষের নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হচ্ছে, মানুষের নিরাপত্তা নেই। এ কর্মকাণ্ড কোন সরকার বা ব্যাক্তির বিরুদ্ধে করা হচ্ছে না, এটা করা হচ্ছে দেশের বিরুদ্ধে, জাতির বিরুদ্ধে।
বৈঠকে বৈশাখী টেলিভিশনের সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, “আমরা সহিংসতার রাজনীতির পক্ষে নই। আমরা সুস্থ ধারার রাজনীতির পক্ষে। সহিংসতা-সন্ত্রাস ও রাজনীতি এক সঙ্গে চলতে পারে না।”
মাছরাঙা টেলিভিশনের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “বিএনপির রাজনীতি ভবিষতের জন্য ক্ষতিকর। আমরা সরকারের পাশাপাশি সব নাশকতা প্রতিরোধ করবো ঐক্যবদ্ধভাবে।”
চ্যানেল একাত্তরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু বলেন, “সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। সরকারের পক্ষে থেকে কোনো সেনসরশিপও আরোপ করার বিষয় নেই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এটা জাতীয় ঐকমত্য।”
এছাড়া সময় টিভির চিফ এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা আহমেদ জুবায়ের, চ্যানেল আই বার্তা প্রধান প্রণব সাহা, এশিয়ান টিভির চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদসহ সব চ্যানেলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/জোনাকি